আজকে অফিসে যেতেই কামাল ভাই বলল,,,,
-আপনার জন্য একটা গুড নিউজ আছে।
-গুড নিউজটা কি ?
-অফিসের একটা কাজে এক মাসের জন্য ইন্ডিয়াতে পাঠানো হচ্ছে চার জনকে।আর এই চার জনের মধ্যে আপনিও আছেন।
-এই চার জনের নামের তালিকা কি ফাইনাল হয়ে গেছে ?
-হম,কিন্তু কেন ?
-আমি যাব না।
-কি বলেন আপনি,এমন একটা সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন।
-আমি এখন ঢাকা ছেড়ে কোথাও যেতে পারবো না।আমার ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা আছে।
-আপনি তাহলে এই ব্যাপারে এমডি 'স্যারের' সাথে কথা বলে দেখতে পারেন।ওনি হয়তো আপনার জন্য কিছু করতে পারবে।
ভেতরে আসতে পারি 'স্যার,,,
-হম আসেন।
-'স্যার' আমাদের অফিস থেকে যে চার জন সিলেক্ট হয়েছে ইন্ডিয়াতে যাওয়ার জন্য সেখানে আমার নামটা আছে।কিন্তু 'স্যার' ইন্ডিয়াতে আমি যেতে চাচ্ছি না।
-দেখেন এটা একটা অফিস এখানে কিছু নিয়ম কানুন আছে।এই নিয়ম কানুন গুলি আমাদের মেনে চলতে হয়।
-কিন্তু 'স্যার' আমি যেতে আগ্রহী না।আমার যাওয়াটা কি কোন ভাবে আটকানো যায় না।
-সব কিছু অলরেডি ফাইনাল হয়ে গেছে এখন আর কিছু করার নেই।আপনাকে যেতে হবেই।
আজকে মেয়েটাকে দেখে একটু অন্য রকম লাগতেছে।মনে হচ্ছে মেয়েটা যেন আমাকে কিছু বলতে চায়।কিন্তু মেয়েটা আমাকে কি বলতে চায়,,,,
মেয়েটার অব্যক্ত মনের কথা আমার আর শুনা হল না।
প্রচন্ড অনিচ্ছা থাকা সত্যেও আমাকে ইন্ডিয়াতে আসতে হল।কিন্তু এখানে আসার পর এখানের কিছুই আমার ভাল লাগছে না।আমি এখানে আসতে পেরছি ঠিকি কিন্তু আমার মনটাকে নিয়ে আসতে পারি নি,,,
এখানে এসে প্রতিদিন একটা একটা করে দিন গুনি।কবে শেষ হবে একটা মাস।কবে আমি আবার দেখবো সেই মায়া মাখা মুখ,,,,
অবশেষে আমি সেই কাঙ্ক্ষিত মূহুর্তের দেখা পেলাম।কিন্তু বারান্দায় গিয়ে দেখি বারান্দাটা ফাঁকা পরে আছে কেউ নেই সেখানে।
সারাদিন তার অপেক্ষার প্রহর গুনছিলাম কিন্তু তার আর দেখা পেলাম না,,,,
আর এভাবেই তার অপেক্ষাই কেটে গেল একটা দিন একটা রাত।বারান্দাটা এখানো সেই আগের মতোই ফাঁকা পরে আছে।
দেখতে দেখতে পার হয়ে গেল একটি সপ্তাহ কিন্তু তার কোন দেখা নেই।কোথায় গেল সে তাকে কেন দেখতে পারছি না এই প্রশ্ন গুলি বার বার মাথায় ঘুরছিল।
এখন মনের ভিতরে একটা অজানা ভয় কাজ করতেছে।আমি কি আর কোন দিন তার দেখা পাবো না।তাকে কি আমি হারিয়ে ফেলেছি,,,,,
না,এ হতেই পারে না।
তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ওদের বাসায় যাব,,,,,
তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ওদের বাসায় যাব,,,,,
কলিং বেল চাপ দিয়ে দারিয়ে কিন্তু এখনো কেউ দরজা খুলল না।তাই আবার কলিং বেল চাপতেই ভেতর থেকে একটা দশ কি বার বছর বয়সের মেয়ে এসে আমাকে জিজ্ঞাস করল,,,
কাকে চাই ?
-এখানে একটা মেয়ে থাকে আঠারো কি বিশ বৎসর বয়স হবে।আমি ওনার সাথে দেখা করতে এসেছি।
-আপনি মনে হয় আপুর কথা বলতেছেন।কিন্তু আপু এখানে নেই।
-কোথায় গেছে ?
-গত মাসে আপু কানাডায় চলে গেছে।
-কানাডায়,,,,,,, ???
-হমমম।আপু কানাডা থেকে স্কলারশীপ পেয়েছিল আর গত মাসের একটা ফ্লাইটে কানাডাতে চলে গেছে।
এমন কিছু শুনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।এই কথাটা শুনার পরেই আমার মনের উপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে গেল,,,,
এখানে আর দারিয়ে থাকতে ইচ্ছে হল না,,,,
-ওকে আমি তাহলে এখন আসি,,,,
-আপনি একটু দাঁড়ান আমি আসতেছি,,,
মেয়েটা আমাকে বাহিরে দাঁড় করিয়ে ভেতরে গেল কিন্তু কেন গেল কিছুই বুঝতে পারলাম না।
"
"
"
-নেন এটা আপনার জন্য আপু রেখে গেছে।
"
"
"
-নেন এটা আপনার জন্য আপু রেখে গেছে।
-কি এটা ?
-এটা একটা চিঠি।আপু চলে যাওয়ার সময় এটা আমার হাতে দিয়ে বলে গেছে কেউ যদি আমার খোঁজ করতে আসে তখন ওনাকে এই চিঠি টা দিবি।
মেয়েটার হাত থেকে চিঠি টা নিয়ে সেখান থেকে চলে আসি,,,,
এই শহরে আমার পরিচিত তেমন কেউ নেই।তাও কেন জানি আজ নিজেকে খুব একা একা লাগছে।মনে হচ্ছে কি যেন একটা হারিয়ে ফেলেছি।নিজেকে খুব নিঃস্ব লাগছে আজ।
রাতে বারান্দায় আসলেই সিগারেট খাওয়ার নেশাটা খুব জেগে উঠে।কিন্তু আজকে আর সিগারেট খেতে ইচ্ছে হল না,,,
আজকে আকাশে অনেক বড় একটা চাঁদ উঠেছে।প্রায় আধ ঘন্টা ধরে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছি।আজ চাঁদ টাকে দেখে মনে হচ্ছে চাঁদটা যেন আমাকে কিছু বলতে চায়,,,,,
চিঠির কথাটা আমি ভুলেই গেছিলাম।বারান্দ া থেকে রুমে এসে দেখি খাটের উপরে চিঠি টা পরে আছে,,,,
চিঠি টা খাম থেকে বের করে পড়া শুরু করলাম,,,,,,,,,,
•
•
•
চলবে
•
•
•
চলবে
Post a Comment