গল্পঃ ব্লাক-ক্যাফেটেরিয়া ☕ পর্ব ৮ লেখক - হাসিবুল ইসলাম ফাহাদ

গল্পঃ ব্লাক-ক্যাফেটেরিয়া  পর্ব ৮

লেখক - হাসিবুল ইসলাম ফাহাদ


___________________
হেলেনকে নিয়ে বনদস্যুদের আস্তানায় হামলা করার জন্য সশস্ত্রবাহিনী নিয়ে প্রস্তুত হতে থাকে রোমান। তবে হেলেন যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে সে রোমানেকে সাহায্য করবে, সেহেতু আলফা পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত ক্রুইফ সাহেবের বাসায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। রোমান তার বাহিনীকে প্রস্তত করতে শুরু করলেও নিজেই আহত হয়ে বিছানায় পরে আছে।
সব মিলিয়ে দু তিন দিন পরে মিশনে নামার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। হেলেনের ভিতরও কিছুটা এক্সাইটমেন্ট কাজ করে। অনেকদিন পর ফাইট করে নিজের শক্তি পরখ করে নেয়ার জন্য একটা উপায় পাওয়া গেল।
রোমান হেলেনের গায়ের গন্ধে এবং চোখের চাহনিতে ক্রমশ আসক্ত হয়ে যাচ্ছিলো।
বিছানার উপরে বসেই রোমান এবং হেলেন তাদের ছোটখাট প্লানটা গুছিয়ে ফেলে। অতঃপর হেলেন তার সামনে বসে থাকা আলফার গায়ের উপর পা রেখে কি যেন চিন্তা করতে করতে একটু আনমনা হয়ে যায়। আলফার নরম তুলতুলে লোমের শরীরে পা রেখে বসার মজাটাই অন্যরকম। রোমানের চোখে হেলেনের এ উদাস দৃষ্টি ধরা পরে। রোমানের আবারো ইচ্ছে জাগে হেলেনের অতি সুন্দর প্রজ্জ্বলিত চেহারার সৌন্দর্যের ঝটকা আরো একটিবার উপভোগ করতে। সে হেলেনের অগোচরেই মুখোশের হুক টেনে খুলে দেয়। ঘটনার আকষ্মিকতায় চমকে উঠে হেলেন, ঘুরে রোমানের দিকে তাকায়।
রোমান কি দেখলো, কি দেখলো না!! তা তার মনে নেই। চোখের সামনে গাঢ় অন্ধকার দেখতে পায় শুধু। একদম অন্ধ হয়ে যাওয়ার মত। প্রচন্ডভাবে ভড়কে যায় সে।
- আমি কি অন্ধ হয়ে গেছি!!
'কিছু দেখতে পাচ্ছিনা কেনো!!
হেলেন!!
তুমি কি আমাকে দেখতে পাচ্ছো!! আমি কিছু দেখতে পাচ্ছি না কেন!!'
রোমানের এ ধরণের চিৎকার শুনে হেলেন নিজেও কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায়। ছুটে আসে ক্রুইফও। ক্রুইফের পেছনে পেছনে আসে সার্ভিস বয়টি।
এসেই রোমানের কথা এবং আচরণ দেখে মুখে হাত চেপে হাসি শুরু করে দেয়।
- "এখানে হাসির কি হলো, জ্যাক?"
ছেলেটিকে প্রশ্ন করে ক্রুইফ।
জ্যাক (সার্ভিস বয়) উত্তরে হাসতে হাসতে জানায়,কিছু হয়নি। স্যারের চোখ কিছুক্ষণ পর ঠিক হয়ে যাবে। হেলেন আপুকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে গিয়েই অন্ধ হয়ে গিয়েছেন তিনি। হতবিহ্বল রোমানকে ধরে জ্যাক শুইয়ে দেয় বিছানায়।
রোমানের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে, আমিও একবার হেলেন আপুর চেহারা দেখতে গিয়ে কিছু সময়ের জন্য অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। টেনশন করিয়েন না আবার দৃষ্টি ফিরে আসবে, হেলেন আসলে একটা ডায়নী।
জ্যাকের কথা শুনে রোমান কিছু বুঝতে না পারলেও চুপটি মেরে বিছানায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে।
হেলেন রোমানের চোখ বন্ধ করা হতবিহ্বল চেহারা দেখে একটা মুচকি হাসি দেয়। কত মায়া লুকিয়ে আছে বন্ধ দু চোখের পাতায়!!
জ্যাক এবং ক্রুইফ ক্যাফেটেরিয়াতে চলে যায়। মিসেস ক্রুইফ রান্না করতে ব্যস্ত হয়ে পরে।
হেলেন, আলফা এবং রোমান ছাড়া সেখানে ছিলো না আর কেউই। হেলেন তার পরিহিত মুখবন্ধনী খুলে ফেলে।
আরেকটু এগিয়ে গিয়ে কাছ থেকে ভালোভাবে দেখতে থাকে রোমানকে। ধীরে ধীরে কমতে থাকে হেলেন এবং রোমানের মাথার মধ্যকার দূরত্ব। হেলেনের গায়ের মিষ্টি কাঁঠালচাপার ঘ্রাণ পাগল করে তোলে রোমানের শরীরের প্রবাহিত হওয়া প্রতিটি রক্তকণিকাকে। কিছুক্ষন বাদে হেলেনের নাকের গরম নিঃশ্বাস নিজের মুখমন্ডলের উপরে অনুভব করে রোমান। নিঃশ্বাসের সাথে বের হওয়া ফুলেল ঘ্রাণটা আরো বেশি তীব্র। অজানা কোনো এক কারণের রোমানের গোলাপী দু'ঠোঁট আলতো ফাঁকা হয়ে আসে। পরক্ষনেই নিজের ঠোঁটের উপরে সে অনুভব করে বেশ কোমল পাতলা অন্য একজন মানুষের ঠোঁটের অস্তিত্ব।
তারপর যা হয়েছিলো সেটা শুধু রোমান কল্পনায়ই ভাবতে পারে, কল্পনারা বেশ সুন্দর! হয়তো রোমানের চোখে দৃষ্টি থাকলে বাস্তব দৃশ্যটি কল্পনার মত এত উপভোগ্য নাও হতে পারতো।
রোমানের মাথার চুলের ভিতরে এক হাত ঢুকিয়ে শক্ত করে ধরে জীবনে প্রথমবারের তুমুল চুমু খায় হেলেন। রোমানের জীবনের প্রথম চুমু না হলেও তার কাছে হেলেনের চুমুই ছিল এখন পর্যন্ত সব থেকে বেশি উপভোগ্য।রোমান ও হেলেনের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় কয়েক সেকেন্ড যেতে না যেতেই বসা থেকে দাঁড়িয়ে পরে আলফা। হেলেনের শাহী পোশাক কামড়ে ধরে টান দেয়। কোন এক কারণে বিষয়টি পছন্দ হচ্ছিলো না আলফার। একটু জোর খাটিয়ে টান দিতেই রোমানের থেকে হেলেন আলাদা হয়ে যায়। আলফার দিকে ঘুরে তাকায় হেলেন। আলফা হেঁটে দরজার দিকে চলে যাচ্ছে। হেলেন বুঝতে পারে আলফার অভিমান।
সেও বিন্দুমাত্র দেরী না করে চলে আসে আলফার পিছনে পিছনে। আলফা হেঁটে হেঁটে প্রধান দরজা দিয়ে বাসার বাইরে উঁকি দেয়। উঁকি দিতেই বেশ অবাক হয়, রিও দাঁড়ানো। রিও-ও দেখে ফেলে আলফাকে। কিন্ত কোনো রিয়েকশন না করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। একরাশ মন খারাপ নিয়ে আলফা আস্তে আস্তে হেঁটে রিওর পাশে এসে দাঁড়ায়। দুজনেই পাশাপাশি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ কিছু বলছে না। আলফার চোখের অগোচরে আস্তে আস্তে উল্টো দিকে ঘুরে যায় রিও। হ্যাঁ,এখন রিওর পেছনের পা দুটোর ঠিক এক হাত দূরেই আলফার অবস্থান।
এটাই ভালো সুযোগ! রিও একটু লাফিয়ে গায়ের সর্ব শক্তিতে পেছনের দু'পা একত্র করে আলফার পেট বরাবর একটি লাথি মারে।
আলফা ছিটকে পাঁচ হাত দূরত্বে গিয়ে পরে। রিওর লাথি খেয়ে দু'বার চেষ্টা করেও উঠে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয় আলফা।
মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে আসে। রিও মনে মনে শান্তি পায়। বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি এরকমই হওয়া উচিৎ। সেদিন ওকে একাই বনের ভিতরে ছেড়ে এসেছিলো আলফা। রিওর পা থেকে অনবরত রক্ত ঝড়ছিলো তখন। আহত রিও তার আগের দিন ও অক্লান্ত ভাবে দৌড়েছিলো। কি করবে ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত অবস্থায় ডিকয় গাছের পাশে দাঁড়িয়েই ঘুমের কোলে ঢলে পড়েছিল সে।
ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই রাস্তায় ঝড়ে পড়া রক্তের দাগ অনুসরণ করে বনদস্যুরা পৌঁছে যায় রিওর কাছে। দূর থেকে বিষাক্ত তীর ছুড়ে রিওকে অবশ করে প্রথমে। এরপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে এগিয়ে যায় রিওর দিকে। এক কোপে মাথাটা আলাদা করে ফেলতে পারলেই কয়েকদিনের খাবারের জন্য আর চিন্তা করতে হত না তাদের।
সহজ শিকার।
রিও বনদস্যুদের জন্য সেদিন আসলেই সহজ শিকার হয়ে যেত, যদি না তখন রিওর রক্ষাকর্তা হিসেবে সেখানে আবির্ভূত হতো কালো চাদর জড়ানো একটি লোক!
রিওর অবশ হয়ে পরে থাকা দেহের সামনে এসে দাঁড়ায় লোকটি। বনদস্যুরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ছুটে আসে তার দিকে। কিন্তু সবাই দৌঁড়ে যখন লোকটির একদম কাছে চলে আসে তখন হঠাৎই থমকে দাঁড়িয়ে যায়। আকাশ থেকে আলোর একটা ছটকা এসে পরে লোকটির হাতে। তৈরি হয় একটি অতিরিক্ত মাত্রায় জ্বলজ্বল করতে থাকা সবুজ রং এর লাঠি। হাতের লাঠি দিয়ে মাটিতে আঘাত করতেই কেঁপে ওঠে চারপাশ। ভূমিকম্প!!
হাতের অস্ত্রগুলো ফেলে পালিয়ে যায় সবাই।
রিওর মাথায় লোকটি হাত বুলিয়ে দেয়ার কিছুক্ষন পরেই, ওর সব ক্ষতগুলো আস্তে আস্তে সেরে যায়। জ্ঞান ফিরে আসে।
এরপর লোকটির পেছনে হাঁটতে হাঁটতে রিও ও দৃষ্টির সামনেই মিলিয়ে গিয়েছিলো শূন্যে।
ভাগ্যিস, লোকটা বাঁচিয়ে দিয়েছিলো রিওকে। নইলে এতদিনে জলদস্যুদের বিষ্ঠায় পরিনত হয়ে যেত রিওর শরীরের মাংস।
হেলেন এসে আলফাকে আহত, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে রিওর উপর ভীষণ চটে যায়। রিওর গালে হাত দিয়ে আঘাত করে বসে।
হেলেনের হাতে জোর ছিলো অনেক। প্রচন্ড ব্যাথা পায় রিও। তার থেকেও বেশি ব্যাথা পায় মনে। আলফাকে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে রিও বাঁচিয়েছিলো সেটার কোনো মূল্যায়নই রইলো না। রিওর লাগাম বাঁধা ছিলো না। মন খারাপ করে গুটি গুটি পায়ে হেঁটে ক্রুইফের বাড়ির আঙ্গিনা থেকে বের হয়ে আসে সে। কিছুদূর আসতেই গ্রামের কিছু দুষ্টু ছেলেরা রিওকে ঢিল দিয়ে আঘাত করতে থাকে। রিও ব্যাথায় দৌড় দেয়। ছেলেরাও ছুটতে থাকে তার পেছন পেছন। কেউ কেউ লাগাম ধরে দড়ি দিয়ে আটকে ফেলার চেষ্টা করছে। রিও বিপদে পরে আবার!! কোথায় যাবে সে!! হেলেনের কাছে তো না-ই। তবে!!
হঠাৎ মনে পরে যাওয়ার মত আরো একটা জায়গা আছে রিওর কাছে।
.
.
.
এদিকে বিলওয়াল দিশেহারা হয়ে এদিক সেদিক ছুটছে।
কি করবে বুঝতে পারছে না একদমই।
ওদের দলের যে আটজন ছেলেকে স্থানীয় ডাক্তার প্রেগন্যান্ট বলে ঘোষনা দিয়েছিল সে আটজন প্রচন্ড ব্যাথার তীব্রতায় ছটফট করছে। চিৎকারের শব্দে এরিকের মহলের চারপাশে ভীড় জমিয়েছে উৎসুক লোকজন,(এরা সবাই হনুমান সোসাইটির লোক ছিলো)
দ্রুত ডাক্তারকে খবর দেয়া হয়। ডাক্তার আসেন। আটজনকেই সারিবদ্ধ ভাবে শুইয়ে রাখেন।
কিন্তু ডাক্তার নিজেও বুঝতে পারছিলেন না তার কি করা উচিৎ হবে!
সিস্টার মেরী কোনো এক অজানা কারণে কান্না করছেন। তার আশংকা খারাপ কিছু হতে চলেছে। সারাদিন একটা হুলুস্থুল কান্ডের মত ঘটে যায়। তবে সন্ধ্যার দিকে ওদের ভাঙ্গা গলার ফ্যাসফেসে চিৎকার কমে আসে। ডাক্তার বাবুও একটু নিশ্চিন্ত হন। সিস্টার মেরী জোরে জোরে বাইবেল পড়তে থাকেন।
পরিস্থিতি খুব স্বাভাবিক হয়ে আসে। বিলওয়াল সিস্টার মেরী এবং ডাক্তার, ওদের সামনেই বসা ছিলেন।
হঠাৎ করেই সবাই একসাথে পেট ধরে মোচড়ানো শুরু করে। তাদের মুখ থেকে কোন শব্দ হচ্ছিলো না। পেটের ভিতরে কিছু একটা নড়াচড়া করছে দেখা যাচ্ছে উপর থেকে। ওদের আটজনের দলের ভেতরে যে সর্দার ছিলেন, সে সিস্টার মেরীকে কাছে ডাকলো। সিস্টার মেরী তার কাছে যাওয়ার পর সে
বলল,
"সিস্টার আমাদের সবার মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে।"
- কি বলো!
"কিছুদিন আগে আমরা নির্দিষ্ট একটি কাজে বনের অপর পাশে যাওয়ার পথে, সুন্দরী একজন মেয়েকে রেপ করেছি। তারপর জংগলের ভেতরেই হত্যা করে ওর দেহকে টুকরা টুকরা করে কেটে ফেলে এসেছিলাম। আমাদের জাহান্নাম ছাড়া যে আর কোনো স্থান নেই। তুমি আমার জন্য প্রার্থনা করবে সিস্টার?"
- সিস্টার মেরী কিছু বলে না মুখে। উনি আরো জোরে শব্দ করে দ্রুত গতিতে বাইবেল পড়তে শুরু করে।
.
.
সবার পেটের ভেতরে কিছু একটা নড়ছে তা উপর থেকে বোঝা যাচ্ছে। দেখতে দেখতেই আস্তে আস্তে নিষ্প্রাণ হয়ে যেতে থাকে এক একজনের তরতাজা বলিষ্ঠ দেহ।
হা করে দেখছিলো বিলওয়াল এবং ডাক্তার, তাদের কিছুই করার ছিল না। চোখ বুজে বাইবেল পড়ছিলো সিস্টার মেরী।
এর পরেই ঘটে আরো আশ্চর্যজনক ঘটনা।
আস্তে আস্তে নাভী ফুড়ে গর্ত করে বের হয়ে আসে খুব সুদর্শন এক একটা সবুজ রঙের পাখি। দেহের রং থেকে উজ্জ্বল আলো ছড়াতে থাকে চারদিকে।
পুরো রুমটাই সবুজ রং এর উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত হয়ে যায়। পাখিগুলোর পালক ও ঠোঁট রক্তে লাল।
মৃত আটজনের দেহগুলো খোলস হয়ে পরে আছে।
ভেতরের সব কিছুই যেন পাখিগুলো কুড়ে কুড়ে খেয়ে নিয়েছে। বাসার কাঁচের জানালা ভেঙ্গে একটা পাখি আকাশে উড়াল দেয়। একটু দূরে চলে যেতেই মনে হয় ওটা পাখি না, একটা সবুজ রঙয়ের গোলা, আস্তে আস্তে সব কটি পাখি উড়ে জানালা দিয়ে চলে যায় দূর, বহু দূরে। পরে থাকে আটটি মৃত ব্যক্তির খোলসের মত দেহ আর তিনজন জীবিত ব্যক্তি।
বিলওয়াল এর মুখ থেকে অস্ফুট স্বরে বের হয়ে আসে,
"দ্যা গ্রীন ফিনিক্স!!"
.
.
.
একটি পাহাড়ের উপরে দু'হাত দু'দিকে প্রশস্ত করে ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে কালো চাদরে মোড়ানো একজন লোক। বাতাসে তার চাদর উড়ছে পত পত করে৷ চাঁদের আলোয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তার শরীরের কালো অবয়ব। পাশেই দাঁড়ানো রিও।
তার ঘাড়ের উপরের কেশরগুলোও বাতাসে দোল খাচ্ছে। রিওর নিজেকে হঠাৎই খুব শক্তিশালী মনে হচ্ছে নিজের কাছে। একটু পরেই সে দেখতে পায় দূর থেকে কিছু সবুজ রং এর আলোর গোলা ছুটে আসছে তাদের দিকে। রিও একটুও ভয় পায়না। এই অদ্ভুত মানুষটার পাশে রিওর কোন ভয় নেই।
সে তাকিয়ে থাকে আগ্রহী দৃষ্টিতে। একটু কাছে আসার পর বুঝতে পারে ওগুলো আলোর গোলা নয়, সবুজ আলো ছড়ানো মাঝারি আকৃতির পাখি, একেকটা এসে সাঁই সাঁই করে বুলেটের মত ঢুকে যাচ্ছে কালো চাদর পরিহিত লোকটির দেহের অভ্যন্তরে। একে একে আটটি পাখি এসে ঢুকে যায় লোকটির শরীরে। দু'হাত প্রশস্ত করা থেকে মুষ্ঠিবদ্ধ করে গুটিয়ে আনতে আনতে একটা দানবীয় গর্জন করে লোকটি। কেঁপে উঠে পুরো জংগল এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা। রিওর মনে হল লোকটির গর্জনের জোরে কালো মেঘগুলো হঠাৎ ই দূরে সরে গিয়ে আকাশ একদম ঝকঝকে ফকফকে পরিষ্কার হয়ে গেল।

চলবে..

ট্যাগঃ

বাংলা গল্প

বাংলা ভুতের গল্প

বাংলা থ্রীলার গল্প

বাংলা ১৮+ গল্প

বাংলা নতুন গল্প

Post a Comment

Previous Post Next Post